প্রতিটি মানুষের জীবনেই ছোট-বড় স্বপ্ন থাকে। শৈশবকাল থেকে একটি ছেলে মেয়ে যখন বড় হয়ে হওয়া শুরু করেন তখন থেকে সবকিছু বুঝতে শিখে, ছোট ছোট ইচ্ছা মনের ভেতর পুষতে থাকে!
স্কুল জীবন শুরু করি আমাদের বরিশালের বরগুনা জেলার একটি স্কুলে! দীর্ঘ 10 বছর পড়াশোনা শেষ করি। ইচ্ছা ছিল ঢাকা শহরে কোন একটি ভাল কলেজে পড়বো।
ছোটবেলার ছোট্ট একটি গন্ডি পেরিয়ে ব্যস্ত শহরটা ঘুরে দেখব। এরকম কত স্বপ্ন! এরপর একমাত্র বড় ভাই ভাইয়া উনি থাকতো সাভার ক্যান্টনমেন্টে! জানতে পারি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের কথা। সে অনুযায়ী পরবর্তী তে ভর্তি হই কলেজে।
প্রথম দিনগুলো কেমন যেন একটু বিরক্তিকর মনে হত! নতুন পরিবেশ, অচেনা মানুষজন, স্কুল জীবনের কোনো একটি বন্ধু নেই! ধীরে ধীরে কয়েকজন বন্ধু হল, শিক্ষকদের মাধ্যমে পরিচিতি পেলাম! সময়ের বিবর্তনে যেন জীবনের সবথেকে ভালো সময় গুলো অতিবাহিত হচ্ছিল!
এখনো মনে পড়ে কলেজ জীবনের সবথেকে রোমাঞ্চকর মুহূর্ত ছিল শীতকালে সেই ভোরে কুয়াশার মধ্যে কলেজে আসা কাঁপতে কাঁপতে এসেম্বিলি করা, মাঠের এক কোনায় গিয়ে শীতের পিঠা খাওয়া! আহা! কি সুন্দর ছিল দিনগুলো। একটি জিনিস (“শিক্ষকদের কড়া শাসন ও ডিসিপ্লিন মেনটেন করা” ) কিছুটা খারাপ,বিরক্তিকর লাগলেও একসময় ফিল করতাম এটাই আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার একমাত্র উপায় এটাই!
মাঝে মাঝে ক্লাস ও ফাঁকি দিতাম এত কড়া শাসনের পরও! হা হা হাসি পায় এখন! যদি আর একটি বার ফিরে ফিরে যেতে পারতাম সেইদিনে ! কলেজের প্রায় প্রতিটি স্টুডেন্টদেরই সব সময় ক্যাম্পাসে টিফিন টাইমে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যেত! একসাথে বন্ধুরা মিলে কি সুন্দর সময় কাটাতো! কলেজের অন্যতম আকর্ষণীয় দিক ছিল বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা।
মনমুগ্ধকর ডিসপ্লে তে পুরো মাঠে থাকতেয় অন্যরকম এক আমেজ! কলেজের সেই সোনালী দিনগুলো কে নিয়ে লিখলে হয়তো শেষ হবে না! দিনগুলো হয়ত জীবন ডায়রির অদৃশ্য পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে! বারবার মনে পড়বে, ছুটি দিতে ইচ্ছে করবে কিন্তু তা আর সম্ভব হয়ে উঠবেনা! খুব বেশি মিস করতে হবে হয়ত দূর থেকেই!
পরিশেষে, ” পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবো কিরে হায় ও সে চোখের দেখা প্রাণের ছোঁয়া সে কি ভোলা যায়। ”
লেখক
আসিফ মাহমুদ, এইচএসসি ২০২০
সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ