জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে এই তথ্য জানা যায়।
অফিসে আদেশে বলা হয়, গত ১৮ নভেম্বর অনলাইনে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় তিনটি অভিযোগের ঘটনায় গঠিত প্রাথমিক তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তাকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারি দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ১০ এর ক(২) ধারা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে আগত মোহাম্মদ শামীম রহমান, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের উপস্থাপিকা এবং একই বছরের ২ ও ৩ ডিসেম্বর আকবর আলী ও আব্দুর রাজ্জাকের দায়েরকৃত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সিন্ডিকেট।
তবে এই বরখাস্ত থাকাকালীন তিনি ভাতা পাবেন বলে অফিস আদেশে জানানো হয়।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, ‘সুদীপ্ত শাহীনকে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বরখাস্ত করা হয়। সুদীপ্ত নিয়মিত অফিস করবেন তবে ডিউটি করবেন না আর তিনি ক্যাম্পাসে তার জন্য বরাদ্দকৃত বাসাতেই থাকবেন।’ চূড়ান্ত তদন্ত করা হবে কিনা সে বিষয়ে তিনি কাগজপত্র দেখে বলতে পারবেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন থেকেই বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি আলোচিত ও গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিলেন। তার নানা অপকর্ম নিয়ে ৩০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। সর্বশেষ গত ১৬ অক্টোবরে পিটিয়ে নাহিদ হোসেন নামের এক ভ্যানচালকের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পেশায় চায়ের দোকানি হলেও দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় জীবিকার তাগিদে ভ্যানে পণ্য পরিবহন করে থাকেন নাহিদ। ওই দিন বন্ধ ক্যাম্পাসে পণ্য পরিবহনের জন্য ভ্যান নিয়ে প্রবেশ করেন তিনি। সন্ধ্যায় পণ্য পরিবহন শেষে বাসায় ফেরার পথে এক নারীর অনুরোধে তাঁকে ভ্যানে করে বাসায় পৌঁছে দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগের সময় নাহিদকে আটক করেন সুদীপ্ত শাহীন। পরে নিরাপত্তা শাখার অফিসকক্ষে নিয়ে পিটিয়ে তার পা ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আট শতাধিক শিক্ষার্থী গুগল ফরমের মাধ্যমে অনলাইনে গণস্বাক্ষর করে সুদীপ্ত শাহীনের অপসারণসহ চার দফা দাবি জানান। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগের অভিযোগ তদন্তে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর সুদীপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত এলো।
বঙ্গ মিরর/এসআর