🖋ডেস্ক রিপোর্ট | বঙ্গ মিরর :
আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মতো তিনি ঘরে অর্থাৎ সমাজে থাকেন না। সারাদিন বনেবাদাড়ে ঘুরে বেড়ানোই যার প্রধান কাজ। লতাপাতা ঘাস কিংবা কখনো আবার কলা খাওয়াই যার অভ্যাস। দেখতেও যেমন আলাদা তেমনি তার জীবনযাপন ও অন্যদের থেকে একটু ভিন্ন। অনেকে হয়তো বলবে আরে এতো গল্পের মোগলি এসে বাস্তবে ধরা দিয়েছে। জ্বি পাঠক ঠিকই ধরেছেন গল্পের মোগলির মতোই অবিকল এক যুবকের দেখা মিলেছে। ২১ বছর বয়সী এ মোগলির বাস জাকার্তায়। তার প্রকৃত নাম এলি।
ছোটো বয়স থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত এলি যেন রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের (Rudyard Kipling) গল্পের সেই ‘মোগলি’ (Mowgli)। সে সভ্য জগত থেকে অনেক দূরে বনের পশুদের কাছে থেকেই বড় হয়ে গিয়েছিল। মজার বিষয় হচ্ছে, এলির স্বভাবও পুরোদস্তুর মোগলির মতোই। ঘরে তৈরী করা খাবার সে খায় না। এমনকি সে তার পিতা-মাতা ছাড়া অন্য কাউকে দেখলে দৌড় দিয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। এভাবেই চলে মোগলি ওরফে জাকার্তার (Jakarta) এলির জীবনযাপন।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছেন এলি। জানা যায়, মা–বাবার ৬ নম্বর সন্তান এলি। তার আগের ৫ ভাই বোন তার জন্মের পরেই মৃত্যুবরণ করে। একারণে এলি তাঁর মা বাবার কাছে সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ। তবে তাদের এ সন্তান ছোটো বয়স থেকেই বিরল রোগে ভুগছে। মানব সমাজের চেয়ে বন, জঙ্গল গাছগাছালি ঘাস লতাপাতা তাকে বেশি টানে।এখানেই তার দিন কেটে যায়।
আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে এলির মা বলেন, এলি বিরল রোগে আক্রান্ত। কথা বলতে পারে না সে। সাধারণ মানুষের মতো খাবার পছন্দ করে না। কলা খেতেই তাঁর ভাল লাগে। অন্য কিছুই পারে না। কেবল দৌড়তে জানে। তিনি আরও বলেন যে, এলি কোনও মানুষকেই পছন্দ করেন না। প্রতিবেশীরা এলিকে ভালবাসে তাঁর খেয়াল রাখে, তবে গ্রামের কয়েকজন তাঁর ছেলেকে ‘বাঁদর’ বলে খেপায়। শুধু ছোটরা নয়, বড়রাও মাঝেমধ্যে এলিকে খেপিয়ে তোলে, মারধর করে। আক্ষেপ এলির মায়ের। আর এজন্যই হয়তো এলিও মানুষকে খুব বেশি পছন্দ করেন না। কেউ ধারে কাছে ঘেঁষার চেষ্টা করলেই এক দৌড়ে বনের ভিতর। ওর পিছনে আমাকেও ছুটতে হয়। না হলে ছেলে কোনওদিন বাড়ি ফিরবে না। মাঝেমধ্যে এলি সপ্তাহে ২৩০ কিলোমিটারও দৌড়ায়।
বঙ্গ মিরর/এমএমআর